যুক্তরাষ্ট্র

ড. ইউনূসের নোবেল নিয়ে কটাক্ষ, সমালোচনার মুখে খালেদ মহিউদ্দীন

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী ড.মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করায় খালেদ মহিউদ্দীনকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে নিউইয়র্কে। অনেকে মহিউদ্দীনের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। তার মন্তব্যের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিক্ষোভ সভাও।
17262950366530721.jpg
ড. ইউনূসের নোবেল নিয়ে কটাক্ষ, সমালোচনার মুখে খালেদ মহিউদ্দীন | ফাইল ছবি

আজকাল রিপোর্ট

১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Fallback Advertisement

গত রোববার জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলমের উদ্যোগে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ডয়েসে ভেলের সাবেক সাংবাদিক খালেদ মহিউদ্দীন। এ সভায় বক্তৃতাকালে ড. ইউনূসের নোবেল প্রাইজ নিয়ে কটাক্ষ করেন তিনি। অথচ এই মতবিনিময় সভাটি ছিল অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কেন্দ্র করেই। 

 

প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রবাসীদের সমস্যা সংবলিত একটি স্মারকলিপি পেশ করার লক্ষ্যে নিয়েই এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছিল। প্রবাসীদের দাবী-দাওয়া  নিয়ে কিভাবে তার সাথে সাক্ষাৎ করা যায় তা নিয়ে আলোচনার জন্যই ছিল সভা। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খালেদ মহিউদ্দিন। 

 

২ শতাধিক অতিথির উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রায়  ৫০ জনের মতো বক্তা বক্তব্যও রাখেন। কিন্তু  খালেদ মহিউদ্দীনের বক্তব্যের পর সভার পরিবেশ পাল্টে যায়। এখন দাবি দাওয়া পেশ নিয়ে আয়োজকরা হতাশায় ভুগছেন।

 

মতবিনিময় অনুষ্ঠানের শুরুতেই উপস্থাপক হিসেবে আশরাফুল হাসান বুলবুলের উপস্থিতি নিয়ে অনেকে আপত্তি তোলেন। সার্বজনীন এই মতবিনিময় সভায় পতিত স্বৈরাচারের দোসর এবং ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতাকারী একজনকে কেন উপস্থাপনার দায়িত্ব দেয়া হলো অনেকে জানতে চান? তাকে সরিয়ে দেবারও দাবি জানানো হয়। 

 

উদ্যোক্তা ফখরুল আলমের জন্য এটিও  এক বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করে।  এই অবস্থায় আশরাফুল হাসান বুলবুলকে উপস্থাপনার দায়িত্ব থেকে মোটামুটি অব্যাহতি দেয়া হয়।

 

মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির খালেদ মহিউদ্দীনের বক্তব্য এক ভিন্ন আবহের সৃষ্টি করে। তিনি বলেন, ‘জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস’ এটি একটি রং স্টেটমেন্ট। আমাদের সংবিধানটি খোলেন। দেখেন,  জনগণ হলো সকল ক্ষমতার মালিক, উৎস তো ভিন্ন কথা। এরপর তিনি বলেন, তারা তো এপয়েন্টেড গাই। তারা জনগণের কর্মচারি। বাংলাদেশে পয়সাওয়ালা হতে হলে ফটকাবাজ হতে হবে, একজন পলিটিক্যাল লিডার হবে। পলিটিক্যাল লিডার হলে কি হয়? সে একটা এমপি হবে। শেখ হাসিনার একটু ভালো নজরে থাকতে পারলে, খালেদা জিয়ার একটু ভালো নজরে থাকতে পারলে সে চোর হবে, বাটপার হবে, মন্ত্রী হবে। তাইতো? 

 

তিনি বলেন, আমি কিছুদিন সরকারি চাকুরি করেছি। নরসিংদীতে পোস্টিং ছিল। ম্যাজিস্ট্রেট ছিলাম। ছোট চাকর। শেখ হাসিনা বড় চাকর ছিল। বড় চাকর। তা  নিয়া এত ইয়া করার কি আছে। বেতন নেয়। আড়াই তিন লাখ টাকা বেতন নেয়। আপনারা কফি খান মাসে তিন জন মিলা এই টাকার সমান। হিসেব কইরা দেখেন। খালেদ মহিউদ্দিন বলেন, আপনারা ড. ইউনুসকে নিয়ে কথা বলছেন। ড. ইউনুস এর আগে যতবার আসছেন তখন আপনাদের মধ্যে কোন চাঞ্চল্য ছিল না। এখন সে একটা চেয়ারের মধ্যে বসছে। তাই বড় ব্যাপার হয়ে গেছে। তার হাতে আলাউদ্দীনের চ্যারাগ এসে গেছে।  সে নোবেল পেতে পারে। নোবেল একটা প্রাইজ রে ভাই। আমি ঠিকানা গ্রুপ থেকে একটা বড় প্রাইজ দিতে পারি আকাশ ভাই’র কাছ থেকে চান্দা-মান্দা নিয়া। একটা প্রাইজ দিতেই পারি। নোবেল প্রাাইজের চেয়ে তা বড়ও হতে পারে। তা ১ কোটি, ২ কোটি কিংবা ১০০ কোটি হতে পারে। এটা প্রাইজ!  শুনলাম আপনারা তার কাছে ১৩ দফা দাবিনামা পেশ করবেন। এতে কোন কাজ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি না। আমি আশাবাদী না। আমাকে এখানে প্রধান অতিথি করে এনেছেন। আমি তার অফিসে কথা বলেছিলাম। এবার তিনি অনেক ব্যস্ত। কথা ও দেখা নাও হতে পারে। ড. ইউনূসের সাথে আমার অফ ক্যামেরা কথা হতেও পারে। আমি আপনাদের দাবি দাওয়ার ব্যাপারে দেখা হলে তাকে বলবো।

 

খালেদ মহিউদ্দীন যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন মঞ্চে ছিলেন লেবার ইউনিয়ন লিডার মাফ মিছবাহ উদ্দীন, এম এন মজুমদার, আকাশ রহমান ও ফখরুল আলম সহ অনেকে।

 

প্রতিবাদ সভা : খালেদ মহিউদ্দীনের এই বক্তব্যের প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার জ্যাকসন হাইটসে বৈষম্যবিরোধী প্রবাসী সচেতন সমাজ ইউএসএ ও প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিক সমাজ সম্মিলিতভাবে  সভা করে। সভায় গৃহীত প্রস্তাবে খালেদ মহিউদ্দিনকে ডয়েচেভেলে থেকে বিতাড়িত এবং সালমান এফ রহমান ওরফে দরবেশ বাবার ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক হিসেবে অভিহিত করে বলা হয়, তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস  সম্পর্কে অত্যন্ত আপত্তিজনক, ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও কান্ডজ্ঞানহীন যে মন্তব্য করেছেন আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। 

 

প্রস্তাবে জ্যাকসন হাইটসের একটি অনুষ্ঠানে এ ধরণের অশালীন ও অসভ্য মন্তব্যের কারণে খালেদ মহিউদ্দিনকে প্রধান উপদেষ্টার নিউ ইয়র্ক সফরের সময়ে কনস্যুলেট ও জাতিসংঘসহ অন্যান্য সকল অফিসে আমন্ত্রণ না জানাবার জোর দাবী জানান হয়।  

জ্যাকসন হাইটসে অনুষ্ঠিত এই প্রতিবাদ সভাতে  সভাপতিত্ব করেন লং আইল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও বাণিজ্য বিভাগের অধ্যাপক ড. শওকত আলী। 

 

সভায় গৃহীত রেজুলিউশনে স্বাক্ষর করেছেন  প্রফেসর ড. শওকত আলী, প্রফেসর ড জগলুল হায়দার,  ড . আবুল কাশেম, সাংবাদিক মঈনুদ্দিন নাসের,  খোন্দকার ফরহাদ, রিতা রহমান, জামাল আহমেদ জনি, আব্দুস সবুর, আহমেদ সোহেল, মোহাম্মদ কিউ জামান, মাহমুদ খান তাসের , শাহ আলম দুলাল , মির্জা আজম,  মোহাম্মদ সুরুজ্জামান , সাঈদ তারেক, এম রহমান মাসুম ও হামিদ সোহেল।

এজে

শেয়ার

Releted News

No featured items for this category.
test

বিজ্ঞাপন কর্নার।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহ্‌ নেওয়াজ
ফোন: +1646 267-7751 ফ্যাক্স: 718-865-9130
ঠিকানাঃ 71-16 35th Ave, Jackson Heights, NY 11372, USA.
ইমেইল: ajkalnews@gmail.com , editor@ajkalusa.com
কপিরাইট © ২০২৪ সাপ্তাহিক আজকাল কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত
অনুসরণ করুন
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed With Love ByGoFlixza
Developed With Love ByGoFlixza