বাংলাদেশ
ঈদ ঘিরে সৈয়দপুর রেল কারখানায় মেরামত হচ্ছে ১১০ কোচ
আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে অতিরিক্ত যাত্রীসেবা দিতে ট্রেনের রেকর্ড সংখ্যক কোচ মেরামত করা হচ্ছে নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায়। প্রয়োজনের মাত্র ২৪ শতাংশ জনবল, বাজেট স্বল্পতা, উপকরণ সরবরাহসহ নানা সমস্যা নিয়েই ১১০টি কোচ মেরামতের কাজ চলছে। এর মধ্যে রয়েছে ৮০টি ব্রডগেজ ও ৩০টি মিটারগেজ।
আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে অতিরিক্ত যাত্রীসেবা দিতে ট্রেনের রেকর্ড সংখ্যক কোচ মেরামত করা হচ্ছে নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায়। প্রয়োজনের মাত্র ২৪ শতাংশ জনবল, বাজেট স্বল্পতা, উপকরণ সরবরাহসহ নানা সমস্যা নিয়েই ১১০টি কোচ মেরামতের কাজ চলছে। এর মধ্যে রয়েছে ৮০টি ব্রডগেজ ও ৩০টি মিটারগেজ। নানা সংকটের মধ্যেও চরম কর্মব্যস্ততায় সময় কাটছে কারখানাটির শ্রমিক-কর্মচারীদের।
মেরামতকৃত এসব কোচ ঈদের বিশেষ ট্রেনগুলোতে সংযুক্ত করা হবে। রেলবহরে বাড়তি কোচগুলো যুক্ত হলে ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রাপথের ভোগান্তি কিছুটা হলেও লাঘব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্রটি আরও জানায়, ১৮৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানাটি। কারখানার ২৯টি শপে রেলকোচ মেরামতের কাজ চলছে। দুই হাজার ৮৫৯ জনবলের বিপরীতে বর্তমানে মাত্র ৮৬০ জন কর্মরত রয়েছেন। ধীরে ধীরে জনবল কমে যাওয়ার পরও এ কারখানায় প্রতিদিন একটি কোচ ও একটি ওয়াগন মেরামত করা হয়। এছাড়া রেলওয়ের নানা ধরনের যন্ত্রাংশ তৈরি করা হয় এখানে। যদিও এ কারখানায় জনবল ও উপকরণ সংকটসহ নানা সমস্যা রয়েছে, তবুও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিকতায় সব সময় কাজে গতি মেলে। অবশ্য শ্রমিকদের অতিরিক্ত কাজের জন্য ওভার টাইমের (অতিরিক্ত কাজের মজুরি) ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে শুরু করে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কাজ চলছে কারখানার ২৯টি বিভাগে। শ্রমিকরা কেউ রঙ আবার কেউ বডি প্রস্তত, আবার কেউবা সিট মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জনবল সংকটের কারণে অতিরিক্ত সময়ও কাজ করতে হচ্ছে। মানুষের নিরাপদ ঈদযাত্রায় এই বাড়তি শ্রমেই আনন্দ খুঁজছেন তারা। এরইমধ্যে প্রস্তুত হওয়া ৫০টি ব্রডগেজ ও ১৪টি মিটারগেজ বগি চলে গেছে পাকশী ও রেলওয়ে বিভাগের কাছে।
ক্যারেজ শপের ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি সুবাহান আলী বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে গাড়ির যাবতীয় কাজ করছি। অচল গাড়িকে আমরা সচল করে থাকি। আমাদের কষ্টের বিনিময়ে মানুষ শান্তিতে ঈদ করতে পারবে, ঘরে ফিরতে পারবে এটাই আমাদের সফলতা।
পেইন্ট শপের শ্রমিক আউয়াল হোসেন বলেন, আমাদের শপের কাজ হচ্ছে কোচগুলো রঙ করে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা। লোকসংখ্যা কমের কারণে খুব কষ্টের মধ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি, সেটা কর্তৃপক্ষের চাপে হোক কিংবা আমাদের দায়িত্ব থেকে হোক। রেল যেহেতেু সেবামূলক প্রতিষ্ঠান, আমরা সেবার জন্য সবসময় বেশি করে শ্রম দেই। যাতে যাত্রীদের কোনো ভোগান্তি না হয়।
কারখানার বিভিন্ন শপের কর্মচারীরা বলেন, ঈদ আসলে আমাদের কাজে ব্যস্ততা বাড়ে। এখন কাজের জন্য দম ফেলার ফুরসত নেই। ঈদ ঘনিয়ে আসছে, তাই কাজের চাপও বাড়ছে। ক্যারেজ শপে মেরামত হয়ে আসা কোচগুলো আমরা রঙ করছি। কেউ ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করছেন।
এ নিয়ে কথা হয় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, কারখানায় ১১০টি কোচ মেরামত করে অপারেটিং বিভাগকে হস্তান্তর করা হবে। এরইমধ্যে ৬৪টি কোচ রেলওয়ে বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে, যা শ্রমিক-কর্মচারীদের কঠোর পরিশ্রমের কারণে সম্ভব হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ঈদের সময় যাতে যাত্রীরা নিরাপদে চলাচল করতে পারে সেজন্য আমাদের শ্রমিকরা উৎফুল্ল হয়ে কাজ করছে। কারখানায় নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে, খুব শিগগিরই জনবল সংকটের সমাধান হবে।