ধর্ম

কোরআন-হাদিসের আলোকে কবর জিয়ারতের দোয়া

জন্ম নিলে মরতে হবে, এ কথাটিই সত্য। একমাত্র মহান স্রষ্টাই চিরঞ্জীব, চিরন্তন। দুনিয়া নামক ক্ষণস্থায়ী মুসাফিরখানায় আমরা বসবাস করছি এবং প্রতি মুহূর্তে এগিয়ে চলেছি চিরস্থায়ী আপন ঠিকানায়, কেউবা আগে কেউবা পরে। কার সিরিয়াল কখন কেউ জানি না।

2022September/tosbi-2308200907.jpg
কোরআন-হাদিসের আলোকে কবর জিয়ারতের দোয়া | ফাইল ছবি

২০ আগস্ট, ২০২৩
Fallback Advertisement

জন্ম নিলে মরতে হবে, এ কথাটিই সত্য। একমাত্র মহান স্রষ্টাই চিরঞ্জীব, চিরন্তন। দুনিয়া নামক ক্ষণস্থায়ী মুসাফিরখানায় আমরা বসবাস করছি এবং প্রতি মুহূর্তে এগিয়ে চলেছি চিরস্থায়ী আপন ঠিকানায়, কেউবা আগে কেউবা পরে। কার সিরিয়াল কখন কেউ জানি না। যদিও পৃথিবীতে আসার সিরিয়াল সুনির্দিষ্ট। প্রথমে দাদা, তারপর বাবা, তারপর সন্তান, তারপর নাতি। কিন্তু যাওয়ার বেলায় এ সিরিয়াল ভেঙে যায়।

পৃথিবীতে এসেছ তুমি খালি হাতে, যাওয়ার বেলায় যেও তুমি নেকির সঙ্গে। কেননা দুনিয়া আখেরাতের সুখশান্তি, ইজ্জত-সম্মান অর্জন করার ক্ষেত্রবিশেষ। প্রথম যেদিন তুমি এসেছিলে ভবে, কেঁদে ছিলে তুমি একা হেসেছিল সবে। এমন জীবন তুমি কর হে গঠন, মরিলে হাসিবে তুমি কাঁদিবে ভুবন। মৃত্যু, কাফন-দাফন, কবর, হাশর, মিজান, পুলসিরাত ও আখেরাতের কথা, চিন্তাভাবনা, মানুষের জীবনে আমূল পরিবর্তন এনে দিতে পারে। নেক আমলের প্রতি হৃদয় উদ্দীপ্ত হয়। তাই আখেরাতের স্মরণের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো জানাজায় শরিক হওয়া ও কবর জিয়ারত।
গভীরভাবে নীরবে নিজের মৃত্যুর পর কবরের ভয়াবহ পরিণতির কথা চিন্তা করা। সাপ, বিচ্ছু, নিকষ কালো অন্ধকার, ভয়াবহ নীরব-নির্জন, প্রিয়জন-আপনজনকে ছেড়ে ওই অন্ধকার কবরে কীভাবে হাজার হাজার বছর থাকব, ভাবতেই গা শিউরে ওঠে। কবরের পাশ দিয়ে গেলেও মৃত্যুর কথা স্মরণ হয়। নিজের জীবনের কৃত অপরাধে অনুতপ্ত হয়। গুনাহ ও অন্যায় থেকে তওবা করার মানসিকতা তৈরি হয়। ফলে নিজের জীবনকে পরিবর্তন করে জাহান্নাম থেকে নিজেকে মুক্ত করে জান্নাতি হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যায়। তাই নিজের পিতা-মাতা, আত্মীয়স্বজন ও বিশ্বের যে কোনো মুসলিমের কবর জিয়ারত করা প্রতিটি মুসলমানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

অন্যদিকে কবরবাসী বড় অসহায়, একটু নেকির আশায়, শাস্তি থেকে একটু নিস্তার পাওয়ার আশায় দুনিয়াবাসী আপনজনের পথের দিকে চেয়ে থেকে আফসোস আক্ষেপ করতে থাকে। অথচ আমাদের সময়ই হয় না বা আমরা অনেকেই কবর জিয়ারত করতেও পারি না। কবর জিয়ারতের নিয়মকানুন ও দোয়া সম্পর্কে কোনো জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাই আমাদের নেই। দুনিয়ার ব্যস্ততা এত বেশি আমাদের গ্রাস করে ফেলেছে যে, একমাত্র মৃত্যুই তার মোহ থেকে সরিয়ে আনতে পারে। ফলে আকস্মিক মৃত্যু তাকেও একদিন অসহায় মিসকিনের মতো সবকিছু থেকে ছিন্নভিন্ন করে বিধ্বস্ত, অপ্রস্তুত অবস্থায় ছিনিয়ে নিয়ে ওই কবরে পৌঁছে দেয়। একটু সময় নিয়ে নিজেকে গুছিয়ে তোলার সুযোগটুকুও তার থাকে না।

প্রিয় নবী (সা.) ইরশাদ করেন, (হে মুসলিম নারীগণ) আমি তোমাদের কবর জিয়ারতে নিষেধ করেছিলাম, এখন থেকে কবর জিয়ারত কোরো, কারণ তা দুনিয়াবিমুখতা এনে দেয় এবং আখেরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। (সুনানে ইবনে মাজাহ ১৫৭১) প্রিয় নবী শবেবরতের বরকতময় রজনিতে মুসলমানের কবরস্থানে জিয়ারত করেছেন। তিনি তাঁর উম্মতের জন্য দোয়া করেছেন।

কবর জিয়ারতের শুরুতে তাদের প্রতি সালাম ও দোয়া করা : হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) মদিনা কবরবাসীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এভাবে সালাম ও দোয়া পাঠ করেন। আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুর ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়ালাকুম আনতুম সালাফনা ওয়া নাহনু বিল আসার। অর্থাৎ হে কবরবাসী! তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহ আমাদের ও তোমাদের ক্ষমা করুন। তোমরা আমাদের আগে কবরে গিয়েছ এবং আমরা পরে আসছি। (তিরমিজি-১০৫৩)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার রসুল (সা.) একটি কবর জিয়ারতে গিয়ে বলেন, আসসালামু আলাইকুম দারাকাওমিম মুমিনিন ওয়া ইন্না ইনশা আল্লাহু বিকুম লাহিকুন।

লেখক : খতিব, কাওলারবাজার জামে মসজিদ, দক্ষিণখান, ঢাকা

শেয়ার

Releted News

No featured items for this category.
test

বিজ্ঞাপন কর্নার।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহ্‌ নেওয়াজ
ফোন: +1646 267-7751 ফ্যাক্স: 718-865-9130
ঠিকানাঃ 71-16 35th Ave, Jackson Heights, NY 11372, USA.
ইমেইল: ajkalnews@gmail.com , editor@ajkalusa.com
কপিরাইট © ২০২৪ সাপ্তাহিক আজকাল কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত
অনুসরণ করুন
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed With Love ByGoFlixza
Developed With Love ByGoFlixza