অন্যান্য
বিরোধীদের অভিযোগ, বাজার সিন্ডিকেটে মন্ত্রী জড়িত
জাতীয় সংসদে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে ব্যর্থতায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির কঠোর সমালোচনা করেছেন বিরোধীদলীয় সদস্যরা।

জাতীয় সংসদে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে ব্যর্থতায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির কঠোর সমালোচনা করেছেন বিরোধীদলীয় সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য দায়ী বাজার সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িতরা মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজন। কেউ কেউ বলছেন, মন্ত্রী নিজেই সিন্ডিকেটের সদস্য হওয়ায় কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তাঁরা মন্ত্রীর পদত্যাগেরও দাবি জানিয়েছেন।
জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, বড় ব্যবসায়ী গ্রুপগুলো একসঙ্গে অনেক বেশি ব্যবসা করে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে জেল-জরিমানা করা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে হঠাৎ করে ক্রাইসিস আরও বেড়ে যাবে। ফলে জনগণের কষ্ট তখন আরও বড়বে। এ কারণেই তাঁদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়।
গতকাল সোমবার সংসদের বৈঠকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য দেওয়া বরাদ্দ পাস হওয়ার আগে বিরোধী সদস্যদের আনা ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টি, গণফোরাম ও স্বতন্ত্র সদস্যরা এসব কথা বলেন। অন্তত ১০ জন সংসদ সদস্য দ্রব্যমূল্য প্রসঙ্গে বক্তব্য দেন। পরে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সমালোচনার জবাব দেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। বিরোধী সদস্যদের ছাঁটাই প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায় এবং মন্ত্রীর প্রস্তাবিত অর্থ মঞ্জুর হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেলের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, তারা কী কাজ করে?
এত বড় একটি মন্ত্রণালয়। এর মন্ত্রীর যদি ডায়নামিজম না থাকে, তাহলে তো জিনিসপত্রের দাম বাড়বেই। তিনি বলেন, বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে। এটা চাইলে অবশ্যই সম্ভব। কিন্তু যদি মনে করেন, ব্যবসা আমারই, তাহলে সেটা দেশ ও দেশের মানুষের জন্য দুঃখজনক।
জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, গত কয়েক মাসে সারাবিশ্বে পণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশে তার প্রভাব পড়ছে না। বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশ ছিল, এখন এটা মনে হয় ১০ শতাংশ। এটা বেড়েই চলছে। মূল্যস্ফীতি মানুষের আয় খেয়ে ফেলছে। মূল্যস্ফীতির কারণে সাবান, রুটি, কটকটি সব ছোট হয়ে আসছে। সরকারের বাজেট বাড়ছে, মানুষের বাজেট ছোট হয়ে আসছে। চাল, ডাল, তেল, মুরগির আকার ও মাংসের পিস ছোট হচ্ছে। মূল্যস্ফীতির একটি দুষ্টচক্রে আবদ্ধ হয়ে গেছে দেশের অর্থনীতি। এর থেকে উত্তরণে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
২০২০ সালের জানুয়ারি ও চলতি জুন মাসের নিত্যপণ্য মূল্যের তুলনা করে জাপার এই এমপি বলেন, ২০২০ সালের শুরুতে মোটা চাল ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, এখন হয়েছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। চিনি ছিল ৬২ থেকে ৬৫ টাকা। সেটা এখন হয়েছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। গরিবের প্রোটিন ফার্মের মুরগি ছিল ১১০ থেকে ১২০ টাকা। সেটা এখন ১৭৫ থেকে ১৯০ টাকা। কারও আয় কি এ সময়ে বেড়েছে? সিন্ডিকেট আছে, এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। সেই সিন্ডিকেট শক্তিশালী। কিন্তু তারা কি সরকারের চেয়ে শক্তিশালী