সাহিত্য
বিয়ের রাতের বিড়াল সমাচার
বেশ অনেকদিন আগের কথা। ঘটনা পঙ্খানুপুঙ্খ মনে না থাকলেও কুয়াশাচ্ছন্ন স্মৃতি থেকে বর্ণনা করছি

বেশ অনেকদিন আগের কথা। ঘটনা পঙ্খানুপুঙ্খ মনে না থাকলেও কুয়াশাচ্ছন্ন স্মৃতি থেকে বর্ণনা করছি। খুব সকালে মহানগর প্রভাতীতে যাত্রা করছিলাম চট্টগ্রামে অফিসের কাজে। ট্রেন ছাড়তে তখন বেশ বাকি। বেশি সকালে ঘুম থেকে উঠার কারণে ক্লান্তি লাগছিলো। নির্দিষ্ট বগিতে উঠে আমার নির্ধারিত আসনে বসে পড়লাম। মুখোমুখি দুটো আসন। জানালার পাশে। আমার হাতে একটি ছোট্ট ব্যাগ, যাতে একদিনের জামা কাপড় আর কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। সযতনে ব্যাগটি কোলের উপর রেখে চোখ বন্ধ করতেই কখন যেন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। যখন জেগে উঠলাম দেখলাম প্রায় ঘন্টা খানেক ঘুমিয়েছি। ট্রেন মনে হয় অনেক আগেই চলতে শুরু করেছে। আমার সামনে বসে আছেন এক ভদ্রলোক। গায়ের রং শ্যামলা, চোখে চশমা। ভদ্রলোক মনে হয়ে এতক্ষন আমাকেই দেখছিলেন গভীর ভাবে। আমি চোখ মেলতেই তিনি তাঁর দৃষ্টি সরিয়ে নিলেন আমার দিক থেকে। তাঁকে বেশ পরিচিতই মনে হচ্ছিলো। কোথায় যেন দেখেছি ? অথবা এমন চেহারার আর কাউকে হয়তো চিনি। সে যা হোক, যাত্রা পথে সাথে বই রাখি, যা পড়তে পড়তে গন্তব্যে পৌঁছে যাই। এ আমার অনেক দিনের অভ্যেস।
রেলগাড়িতে ভ্রমণ আমার সবচেয়ে প্রিয়। শৈশবে যখন রেলগাড়িতে ভ্রমণ করতাম, তখন শরীরের প্রায় অর্ধেক থাকতো জানালার বাইরে। কখনো নির্মল, কখনো বা ধুলো মাখা বাতাস আমার সারা শরীরে পরশ বুলিয়ে যেত। জানালা দিয়ে খুব উপভোগ করতাম বাইরের বিস্তৃত শস্য খেত, প্রায় শুকিয়ে যাওয়া খাল-বিল, মাঝে মধ্যে নদী -নালা, দূরে আকাশের গায়ে মিশে থাকা গাছপালা। রেলগাড়ি চলার সময় যে দুলোনি হতো সেটাই আমার সবচেয়ে ভালো লাগতো। ক্লান্ত হয়ে গেলে চোখ বন্ধ করে রেলগাড়ির দুলোনি উপভোগ করতাম। দোলা খেতে খেতে একসময় ঘুমিয়ে পড়তাম। এখনো ভালো লাগে রেলগাড়ির দুলোনি।