সারা বাংলা
৫ মিনিটের ঘূর্ণিঝড়, উড়ে গেল দুই শতাধিক বাড়ি
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড়। মাত্র পাঁচ মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে উপজেলার দুই শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। উপড়ে গেছে টিউবওয়েল ও দুই শতাধিক গাছপালা। উড়ে গেছে অধিকাংশ ঘরবাড়ির চাল। ঘরের চালের নিচে আটকা পড়ে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন।
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড়। মাত্র পাঁচ মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে উপজেলার দুই শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। উপড়ে গেছে টিউবওয়েল ও দুই শতাধিক গাছপালা। উড়ে গেছে অধিকাংশ ঘরবাড়ির চাল। ঘরের চালের নিচে আটকা পড়ে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন।
শনিবার রাতে উপজেলার একটি বাজার ও তিনটি গ্রামে প্রচণ্ড বেগে আঘাত হানে এ ঘূর্ণিঝড়। রাত ৯টার সময় ঘূর্ণিঝড় শুরু হয়। রাত ৯টা ৫ মিনিটের মধ্যে উপজেলার শেখপুর বাজারের ৫০টি দোকান ও তিনটি গ্রামের দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এসব এলাকায় শনিবার বিকেল পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড়ে অধিকাংশ বাড়ির ঘরের চাল উড়ে গেছে। ঘরের চালের নিচে আটকে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন। আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, শিবচরের উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের ছলেনামা, মৃজারচর ও সিপাইকান্দি ও শেখপুর বাজারে শনিবার রাত ৯টার দিকে প্রবল বেগে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। এতে শেখপুর বাজারের ৫০টি দোকানের চাল উড়ে যায়। ঘূর্ণিঝড়ে শেখপুর বাজারের হাজেরা খাতুন উচ্চবিদ্যালয়, দুটি মসজিদ ও তিনটি কিন্ডার গার্টেনসহ মোট চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সড়কের পাশের গাছ-পালা ভেঙে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ছলেনামা, মৃজারচর ও সিপাইকান্দি গ্রামের দেড় শতাধিক টিনের ঘর উপড়ে যায়। সেই সঙ্গে উপড়ে যায় টিউবওয়েল ও দুই শতাধিক গাছপালা। ঘরের টিনের চাল খুঁজে পাচ্ছেন না মালিকরা। বাড়ি থেকে চাল উড়িয়ে নিয়ে যায় বহুদূর। ঘরের টিনের চাল, বিদ্যুতের তার এবং গাছের ডাল একসঙ্গে আটকে রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সারারাত বৃষ্টিতে ভিজে এসব পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদারীপুর থেকে শিবচর উপজেলার বিদ্যুৎ সংযোগের প্রধান লাইনের প্রায় আটটি খুঁটি ভেঙে গেছে। বিভিন্ন গ্রাম ও বাজারে বিদ্যুতের ২৫টি খুঁটি উপড়ে গেছে। এসব এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
বাঁশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল বাসার মিয়া বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় দুই শতাধিক ঘরবাড়ি উড়ে গেছে। শেখ বাজারের ৫০টি দোকান ও তিনটি গ্রামের প্রায় দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি তছনছ হয়ে গেছে। গতকাল রাত থেকে মানুষ বৃষ্টিতে ভিজে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
মাদারীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পরিচালক মো. পান্নু খান বলেন, শনিবার রাত থেকে মাদারীপুরের শিবচরের ১৯টি ইউনিয়ন একটি পৌরসভায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। ঠিক কখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। অনেক স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গেছে। ঠিক হতে একটু সময় লাগবে।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, সকালে খবর পেয়ে ঘূর্ণিঝড়কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্য চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। দ্রুতসময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হবে।
শিবচর উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন খান বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের ঘরবাড়ি মেরামতসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়া হবে।